আমার মন ভালো করার একটাই ওষুধ আর সেটা হলো পাহাড়। প্রতিরাতে আমার স্বপ্নে সে হাতছানি দিয়ে আমাকে ডাকে।
তাই এবার গরমের ছুটি পরতেই আমরা ঘুরতে গেলাম মেঘের রাজ্য মেঘালয়া। আমার বাবার পরিচিত এক ট্রাভেল এজেন্সির সাথেই আমাদের এই ভ্রমণ।
6ই মে আমরা হাওরা থেকে সরাইঘাট এক্সপ্রেসে চেপে রওনা দিলাম গৌহাটির উউদ্দেশ্যে। পরের দিন অর্থাৎ 7ই মে বেলা 11টা নাগাদ গৌহাটি তে নেমে স্টেশনের পাশেই বুক করা হোটেল অভিশেখ রেজেন্সি তে আমরা উঠলাম, বেশ সুন্দর হোটেলটা। ফ্রেশ হয়ে দুপুরের আহার মিটিয়ে 3টে নাগাদ আমরা বাসে করে রওনা দিলাম উমানন্দ আশ্রমের উদ্দেশ্যে বাস থেকে নেমে বোটে চেপে ওই আশ্রমে পৌছালাম মন্দিরটি বেশ উঁচুতে। ভিতরে পৌছে বেশ ভালোই লাগলো। লাইন দিয়ে নিচে নেমে ভুগর্ভে থাকা উমানন্দ ভগবান (যা মহাদেবের আরেক নাম) দর্শন করলাম। মন্দিরটিতে গনেশ ও বজরাংবলির মুর্তি ছিলো যেগুলো খুবই সুন্দর। ফিরতে বিকেল হলো সেইদিন হোটেলেই রইলাম। পরের দিন ভোর 4টেয় মা কামাক্ষা দর্শন করার উদ্দেশ্যে বাসে করে রওনা দিলাম। 5টা থেকে লাইন দিয়ে বেলা 11টা নাগাদ মা কে দর্শন করা ও পুজো দেওয়া সম্পন্ন হলো। হোটেলে ফিরে একটু রেস্ট নিয়ে আবার 3টে নাগাদ বেরোলাম বশিষ্ঠমুনির আশ্রম ও বালাজী মন্দির দর্শন করতে।
8ই মে সকাল ৭টায় আমাদের বাস ছাড়লো কাজিরাঙার উদ্দেশ্যে। পৌঁছালাম তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল 5টা কাজিরাঙায় হোটেল শান্তি প্যালেসে সেই রাত টা থাকা হলো। পরের দিন সকাল 7টায় বেরিয়ে পড়লাম জঙ্গল সাফারির উদ্দেশ্যে জিপ গাড়িতে করে, জনপ্রতি ভাড়া 600 টাকা করে। দেখতে পেলাম একশৃঙ্গ গন্ডার, হাতি, হরিন এছাড়াও পেলিকান ও সাড়স ও আরও কিছু নাম না জানা পাখি। প্রায় আড়াই ঘন্টা সফর করে হোটেলে ফিরলাম। বেলা 12টা নাগাদ আমরা রওনা দিলাম শিলং এর পথে।
শিলং পৌছালাম তখন ঘড়িতে রাত 8-30। সব রাস্তাঘাট শুনসান। শিলংএ থাকলাম নিউ শিলং গেস্ট হাউসে।
পরের দিন সকাল ৭টায় আমরা চেরাপুঞ্জির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। চেরাপুঞ্জি তে দেখলাম একটা নাম না জানা ভিউ পয়েন্ট, ওয়াকাবা ফলস, রামকৃষ্ণ মিশন, নোয়াকালিকাই ফলস, সেভেন সিস্টার ফলস। 7টা নাগাদ হোটেলে ফিরলাম। পড়ের দিন 12ই মে আমরা ভোর 6টা নাগাদ ডাউকির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। 11-30 নাগাদ ডাওকি পৌছালাম। ডাওকি লেক এ বোটিং করলাম, 800 টাকা ভাড়া 3জনের জন্য। ডাওকি ঘুরে ফেরার পথে দেখলাম ভারত বাংলাদেশ বর্ডার। তারপর গেলাম মাউলিনং গ্রাম এবং লিভিং রুট ব্রিজ দেখে হোটেলে ফিরলাম রাত 10টা নাগাদ।
শেষ দিন 13ই মে আমরা সকালে শিলং শহর ঘুরতে বেরোলাম। এলিফ্যান্ট ফলস, লেডি হায়দারি পার্ক ঘুরলাম, রাস্তায় অসম্ভব জ্যাম থাকার কারনে সব পয়েন্ট ঘোরা সম্ভব হলো না। সেইদিন বিকেলে পুলিশ বাজার মার্কেট একটু ঘুরে নিলাম
14মে ভোর 6টায় গৌহাটির দিকে রওনা দিলাম 12-20র সরাইঘাট এক্সপ্রেসে চেপে ফিরলাম হাওরা।
স্বপ্নের মত এই সাতটা দিন কাটানোর পর আবার শুরু হলো প্রত্যেকদিনের ব্যাস্ত রুটিন।
Comments